ভারতে গরু কোরবানি বন্ধের আবেদন করেছেন বিজেপি সাংসদ "অর্জুন সিং"। সব দেশের মত ভারতের কোরবানি ইদেও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য জবাই হয় লাখো পশু। তবে ভারতে গরু কোরবানি নিয়ে প্রতিবারের মত এইবারও উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
আসছে কোরবানির ঈদ, কোরবানির ঈদ মানেই মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এই দিন পশু কোরবানির মাধ্যমে ত্যাগ স্বীকার করা হয় আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করার জন্য। প্রতিটা দেশেই বেশিরভাগ মুসলমান, যাদের কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য আছে তারা আল্লাহকে খুশি করার জন্য প্রতিবছর এই কোরবানি ঈদে পশু জবাই করার মাধ্যমে ত্যাগ স্বীকার করে। সব দেশের মতো ভারতেও প্রতিটা কোরবানি ঈদে পশু কোরবানির প্রচলন রয়েছে তবে এ নিয়ে প্রতি কোরবানি ইদেই কোনো না কোনো সমস্যা দেখা দেয়! ঠিক তেমনি এই বছরও ভারতে কোরবানি বন্ধের জন্য আবেদন করেছে বিজেপি সাংসদ "অর্জুন সিং"। শুধু এই বছরই নয় প্রায় প্রত্যেক বছরই কোরবানি আসলেই এরকম কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এই ধরনের আবেদন আজকে থেকে নয় অনেকদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে। হাইকোর্টে কোরবানি বন্ধের আবেদন প্রথম করা হয় ২০০৮ সালে তারপর অনেকবারই এই রকম আবেদনের কথা শোনা গেছে।
২০১৯ সালে গত বছরও একই আবেদন করা হয় তখন হাইকোর্ট রায় দেয় কোন পশু কোরবানি করার আগে অবশ্যই পশুহত্যার নিয়মগুলো মানতে হবে কিন্তু তাদের অভিযোগ কেউই মানছেনা পশু হত্যার সঠিক নিয়ম তাই বারবার তারা একই অভিযোগ নিয়ে হাজির হয় হাইকোর্টে। এছাড়াও বিজেপি সাংসদ "অর্জুন সিং" মসজিদে মাইকে আজান দেয়া নিয়েও হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন তখন তার এইরকম কর্মকান্ড দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন ভারতের মুসলিম সমাজ।তিনি একের পর এক তার মুসলিমবিদ্বেষী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন এবং এতে ক্ষুব্ধ ভারতের মুসলমানরা তবে কেউই কোন প্রতিবাদ করতে পারছেনা কারণ তিনি একজন সাংসদ। আজকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে এই খবর ছাপা হওয়ার পর ঝড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে। বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলো এর তীব্র বিরোধিতা জানিয়েছে তবে একটা বিষয় নিয়ে সবারই সংশয় রয়েছে, কুরবানী আসলেই পশু হত্যা আইন নিয়ে ভারতের সকল জনগণ জাগ্রত হয় তবে সারা বছর যে শত শত, হাজার হাজার পশু হত্যা করা হচ্ছে সেগুলো নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই।
তাই এই ধরনের কর্মকাণ্ডকে মুসলিম বিদ্বেষী কর্মকান্ড বললে ভুল হবে না। মুসলমানদের রীতি অনুযায়ী কোরবানি অনেক পবিত্র একটা জিনিস এবং ইসলামে পশু হত্যা নিয়ে রয়েছে সুস্পষ্ট নির্দেশনা তবে কোরবানির ক্ষেত্রে পশু জবাই নিয়ে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেগুলো মেনে কুরবানী করা ইসলামে পুরোপুরি জায়েজ কিন্তু ভারতের কিছু মানুষ গরু কোরবানির ক্ষেত্রে দ্বিমত পোষণ করেছে যে কারণে প্রতি বছরই এইরকম অদ্ভুত আবেদনের শিকার হচ্ছে বিচার বিভাগ। শুধু বিচারবিভাগই নয় তাদের এই ধরণের কর্মকান্ডে ক্ষুব্দ মুসলিম বিশ্বের প্রত্যেকটি মুসলিম। এখন শুধু দেখার পালা ভারতের হাইকোর্ট এ আবেদনের কি রায় দেয় তবে এটা সুস্পষ্ট করে বলা যেতে পারে যে, মুসলমানদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী কেয়ামতের আগ পর্যন্ত পশু কোরবানি চলবেই।তাই মুসলিম বিশ্বের সকল মুসলিমকে এক হয়ে ইসলামের উপর যত আঘাত আসবে তার মোকাবেলা করার প্রস্তুতি নিতে হবে কারণ ইসলামের সকল নিয়ম কানুন পালন করা প্রতিটা মুসলমানের জন্যই বাধ্যতামূলক। তাই আল্লাহ তায়ালার হুকুমকে সঠিকভাবে পালন করার জন্য শুধু ভারতেই নয় দুনিয়ার সকল দেশেই কোরবানি দিতে যাতে কোন সমস্যার সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা এখন মুসলমানের দায়িত্ব।
২০ জুলাই ২০২০
লিখেছেনঃ সাফিন আফনান
0 Comments